Friday, September 7, 2012

‘চটি বই লেখিকাই' যদি, তবে তাঁকে নিয়ে এত কথা কেন!!!



গত সপ্তাহে অনলাইন সংবাদ-এ পড়লাম, তসলিমা নাসরিন টুইটারে বিখ্যাত ঔপন্যাসিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন, কবে কোথায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাকে সেক্সচুয়্যালি এবিউস করেছে, সেই ব্যাপারে। খবরটির শিরোনাম পড়েই আমি পরবর্তী সংবাদে চলে গেছি। মাথাও ঘামাইনি তসলিমার এই অভিযোগ নিয়ে। পরক্ষণেই ভুলে গেছি তসলিমার কথা। কাকতালীয়ভাবে আমার হাতে তখন সুনীলের একটি গল্প সমগ্র। দারুন সব গল্প, ওগুলো রেখে আমার আর ইচ্ছে করেনি তসলিমার এই গঁৎবাধা অভিযোগ নিয়ে মাথা ঘামাতে। যেমন ইচ্ছে করেনি তসলিমার বই ‘ক’ প্রকাশিত হওয়ার পর যে শোরগোল পড়েছিল, সেই জোয়ারে গা ভাসাতে। ‘ক’ আমি পড়েছি। একবার পড়েই বইটি কোথায় রেখেছি সেটাও আর তাকিয়ে দেখিনি।
আমরা যারা প্রতিদিন সংবাদপত্র পড়ি, গল্পের বই পড়ি তাদের কাছে তসলিমা নাসরিন সবচেয়ে বহুল শ্রুত একটি নাম। তাঁর নাম এত বেশীবার মিডিয়াতে এসেছে যে তাকে এখন আর তার নাম দিয়ে চেনার প্রয়োজন পড়েনা। উনার জন্মসূত্রে পাওয়া নামের বদলে পাঠককুল তাঁকে ‘বিতর্কিত লেখিকা’, বিকৃত রুচীর লেখিকা’, নষ্ট মেয়েমানুষ’, ‘ভারতের দালাল’, দেশ থেকে বহিষ্কৃত একমাত্র নারী’ হিসেবেই ভাবতে পছন্দ করে। আর তাঁর লিখিত বইয়ের সংখ্যা যা-ই হোক না কেনো, ‘ক’ আর ‘লজ্জা’ ছাড়া অন্য কোন বই নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা তেমন হতে দেখা যায়না। কারন হতে পারে, এই দুটি বইই সরকার থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বেশ কিছুদিন তসলিমা প্রসঙ্গ চাপা পড়েছিল। কিনতু তসলিমা আবার ফিরে এসেছেন। আসলে যাঁরা একবার মিডিয়ার স্বাদ পেয়ে থাকেন, তাঁদের বার বার মিডিয়াতে মুখ দেখাতে না পারলে ভাল লাগেনা। আমার কথাই ধরিনা কেন, আমি কোনদিনই লেখালেখির ধারে কাছে দিয়েও হাঁটিনি। সংসার করেছি মন দিয়ে, স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ আনন্দেই কাটিয়েছি এতটা কাল। কিনতু সন্তান বড় হয়ে তার নিজ নিজ কর্মক্ষেত্র বেছে নিতেই আমি অনেকটাই নিঃসঙ্গ বোধ করতে শুরু করি। ফেসবুকের মাধ্যমেই ব্লগের সাথে পরিচিতি। দুই একজন ব্লগার বন্ধুর উৎসাহে ব্লগে লিখতে শুরু করি। ধীরে ধীরে পাঠকের মন্তব্য পেতে শুরু করি। লেখার নেশায় পায় আমাকে। নিঃসঙ্গতা কাটতে শুরু করে, সংসারের দৈনন্দিন কাজে ভাটা পড়ে। প্রতিদিন একটা কিছু না লিখতে পারলে দিনটা মাটি মাটি মনে হয়। মনে হতে থাকে, দুই দিন না লিখলেই পাঠকরা আমাকে ভুলে যাবে। ব্লগে লিখেই আমার এই অবস্থা, আর সারা দুনিয়ায় বিতর্কের ঝড় তোলা তসলিমা নাসরিনের কী অবস্থা হতে পারে, সেটা বলাই বাহুল্য।
তসলিমা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন সম্প্রতি হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে লিখে। দৈনিক আমাদের সময়ে লেখাটি মুদ্রিত হতেই পাঠক হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। আমাদের সময় পত্রিকার অনলাইন সংস্করনে পাঠকের মতামত দেয়ার সুযোগ আছে। তসলিমাকে ‘নোংরা লেখিকা’ বলে যারা আখ্যায়িত করে থাকে, সেই পাঠক সমাজই মতামত অপশনে গিয়ে ‘নোংরাতম’ ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ করে। একজন লেখকের সাথে পাঠকের যোগাযোগ এর সূত্রই হচ্ছে লেখালেখির বিষয়। লেখক লিখবে। পাঠক পড়ে তা নিজের মনেই বিচার বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিবে, এই লেখকের লেখা ভবিষ্যতে সে আর পড়বে কিনা। ভালো লাগলে আবার পড়বো, ভালো না লাগলে পড়বোই না। কিনতু লেখককে ব্যক্তিগত আক্রমণ করার মানসিকতা কখনওই কারো কাম্য হতে পারেনা।
তসলিমা নাসরিনের লেখায় সাহিত্যমান আছে কি নেই, সেটাও বিচার করবে পাঠক। সেই বিচারেই হয়তোবা পাঠককুল তসলিমা নাসরিনের লেখা বইগুলোকে ‘চটি বই’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। বিভিন্ন ঘরাণার লেখক যেমন আছেন, পাঠকের মধ্যেও শ্রেণীভাগ আছে। কেউ কবিতা পড়তে ভালোবাসে, কেউ ভালোবাসে গল্প-উপন্যাস, কেউ ভালোবাসে সায়েন্স ফিকশান, কেউ ভালোবাসে রাজনৈতিক বিষয়। আরও কিছু পাঠক আছেন, তাদের কেউ কেউ ভালোবাসেন সানন্দা পড়তে, কেউ বা ভালোবাসেন সিদ্দীকা কবিরের রান্নার বই, কেউ ভালোবাসে শুধুই ‘হিমু’, কেউ ভালোবাসে শুধুই ‘মিসির আলী’ পড়তে। কিছু উঁচু শ্রেণীর পাঠক ভালোবাসেন কঠিন প্রবন্ধ, আবার অনেকে ভালোবাসেন চটুল লেখা পড়তে। ‘চটি বই’ এর পাঠক সংখ্যাও কম নয়। সকলের সামনে ভাল বই হাতে রেখে, আড়ালে ‘চটি বই’ পড়ার পাঠক প্রচুর আছে। নাহলে ‘চটি বই’ গুলো এত ছাপাও হতোনা, বিক্রীও হতোনা। নীলক্ষেতের এক বই বিক্রেতার কাছ থেকে আগে অনেক পুরানো বই সস্তায় কিনতাম। তার এই অল্প টাকায় সংসার চলে কিনা জিজ্ঞেস করতেই সে খুব আস্তে করেই বলেছিল, আমার মতো ক্রেতা খুব কমই আসে তার কাছে, পোকায় খাওয়া পুরানো বই বিক্রীর টাকায় সংসার চলেনা বলেই চটের ঢাকা সরিয়ে টুকরীর ভেতর আসল বই দেখালো। ‘চটি বই’ শব্দটি সেই আনোয়ার নামের বই বিক্রেতার মুখে প্রথম শুনেছিলাম। যাই হোক, চটি বই যারা লিখে তারাও যেমন লেখক, যারা সেই সমস্ত বই কিনে, তারাও পাঠক। যেহেতু শ্রেণীবিন্যাস করাই আছে, কারো সাথে কারোর রেষারেষি তো হওয়ার কথা নয়। তারপরেও কেনো তসলিমাকে নিয়ে এত আলোচনা? ‘বিতর্কিত’কে আবার প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা!
হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে তসলিমার লেখাটি আমি মন দিয়েই পড়েছি। দুই একটা মন্তব্যে পাঠক হিসেবে আহত হয়েছি ( বাংলাদেশের পাঠকদেরকে উনি অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত বলেছেন), কিনতু লেখার কোথাও আমি অশ্লীলতা খুঁজে পাইনি। উনার মতামত উনি দিয়েছেন, উনার বিশ্বাস থেকেই উনি লিখেছেন। সম্প্রতি বিখ্যাত এক কলামিস্ট তাঁর লেখায় তসলিমা নাসরিনকে একহাত নিয়েছেন। কলামিস্ট সাহেব তসলিমার নিন্দা করেছেন এই বলে যে হুমায়ুন আহমেদের মৃত্যুতে তাঁর পাঠককুল যখন শোকাভিভূত, ঠিক ঐ সময় তসলিমা হুমায়ুন আহমেদকেও একহাত নিয়েছেন। অথচ হুমায়ুন আহমেদকে নিয়ে লেখাটিতে তসলিমা হুমায়ুন আহমেদের প্রশংসাই বেশী করেছেন সারা লেখাতে। এই প্রথম আমি তাঁর লেখা পড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছি। কিনতু যেহেতু লেখাটি লিখেছে তসলিমা নামের বিতর্কিত মহিলা, তাই মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেছে! হুমায়ুনের সমালোচনা না করে তসলিমা আসলে আমাদের পাঠকসমাজের সমালোচনাই বেশী করেছেন এই লেখাতে। উনি বিশ্বাস করেন মেয়ের বান্ধবীকে বিয়ে করেও হুমায়ুন আহমেদ যেভাবে আমাদের পাঠক সমাজে নন্দিত লেখক হিসেবেই পরিচিত ছিলেন, এই একই ধরনের কাজ যদি তসলিমা করতেন, তাহলে তাকে ছিঁড়ে খুঁড়ে ফেলা হতো। কথাটির মধ্যে একটি সত্যি তো অবশ্যই লুকিয়ে আছে। সেটা কি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে হবে? হুমায়ুন যেই তরুণীকে প্রকাশ্যে, ধর্মীয় বিধান মেনেই বিয়ে করেছিলেন, তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর সেই বিবাহিত দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীকে তো আমাদের সমাজে অনেকটাই একঘরে করে দেয়া হয়েছে। বিয়ের সাত বছর পর স্বামীর মৃত্যুতে তার মাথায় কেউ সান্ত্বনার পরশ বুলায়নি, বরং হুমায়ুনকে কেন পটিয়ে বিয়ে করেছে, তার জন্য ধিক্কার দিয়েছে। কিনতু যিনি বিয়েটা করলেন, তাঁকে তো এর জন্য দায় নিতে হয়নি। কাজেই তসলিমাকে আমি অপছন্দ করতে পারি, তাঁর লেখার সাথে সহমত পোষণ না-ই করতে পারি, ভাল লাগেনা বলে তাঁর লেখা না পড়তে পারি, তাই বলে তার বিবেক বা বিচারবোধ থেকে প্রসূত লেখা বন্ধ করার অন্যায় দাবী তো করতে পারিনা!
আমি কারও লেখাতেই সাহিত্য খুঁজে বেড়াইনা। সাহিত্য খুঁজতে গেলে পাঠকের পড়ার আনন্দ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। লেখায় সাহিত্য খুঁজবে সাহিত্যবোদ্ধারা, আমার মত সাধারণ পাঠকের কাজ পড়ে আনন্দ পাওয়া। এই জন্যই হুমায়ুন আহমেদের লেখা আমার ভাল লাগে, সুনীল, সমরেশ ভালো লাগে। মহাশ্বেতা দেবীর লেখার চেয়ে আশাপূর্ণা দেবীর লেখা আমাকে বেশী টানে। প্রকৃতি ভালোবাসি বলেই বুদ্ধদেব গুহ’র লেখা ভালো লাগে। বুদ্ধদেব গুহের লেখাতে কিছু কিছু অস্বস্তিকর অংশ থাকে, লেখার প্রয়োজনেই হয়তো নর-নারীর মেলামেশার আদি ব্যাপারগুলো উনি নিয়ে আসেন লেখাতে, সেগুলোকে অস্বীকার না করেই আমি বন-জঙ্গলের রূপ বর্নণা পড়ি, মনে হয় আমি বুঝি সেই গভীর অরণ্যের ভেতর দিয়েই হেঁটে যাচ্ছি।
সেভাবেই আমি তসলিমার লেখাও পড়ি। তসলিমার ‘মেয়েবেলা’ পড়ে অসহায় মেয়েদের জন্য কষ্টে আমার বুক ফেটে গেছে। কারন তসলিমার আগে আর কারো লেখা আমি পড়িনি যেখানে মেয়েদের অসহায়ত্বের কথা কোন রাখঢাক না রেখেই বলা হয়েছে। যতটুকু মনে পড়ে ‘আমার মেয়েবেলা’তেই তসলিমা তার বাবার কথা লিখেছে। লিখেছে তাদের বাড়ীর কাজের মেয়ের সাথে তার বাবার অবৈধ সম্পর্কের কথা। লিখেছে তার মায়ের প্রতি তার বাবার নির্যাতনের কথা। পড়ে আমার দুই চোখ ফেটে জল এসেছে। বুকে কতটা কষ্ট জমে থাকলে, কতটা অপমান জমে থাকলে, তবেই একটা মেয়ে এই কথাগুলো বলতে পারে। তসলিমার লেখা এই বইটিতে সবাই নোংরামী খুঁজে পায়, কিনতু মত প্রকাশের সরল সাহসকে খুঁজে পায়না। তসলিমার লেখার মান যাই হোক না কেনো, তিনি অন্যের কুকীর্তি নিয়ে সমালোচনা করার আগে নিজের ঘরের থেকে ময়লা বের করার মত দুঃসাহস দেখিয়েছেন। তসলিমার দূর্ভাগ্য, যে মেয়েদের পক্ষে লিখতে গেছেন তিনি, সেই মেয়েরাই তাঁকে ঝাঁটা মারতে আসে সবার আগে।
কলামিষ্ট সাহেবের দুইদিন আগের সেই লেখায় পড়লাম, তসলিমা এতটাই বিকৃত রুচীর লেখিকা যে তার বাপকেও ছাড়েনি। কিনতু বাপের যে অপকর্ম নিয়ে তসলিমা লিখেছে, সেই অপকর্মগুলো একজন পুরুষের করা উচিত কি না তা অবশ্য কলামিষ্ট সাহেব বলেননি। লেখক সাহেব তাঁর লেখাতে তসলিমার নানা অপকীর্তির কথা প্রকাশ করতে গিয়ে তসলিমার মতই ভাষা ব্যবহার করেছেন। যা পড়ে আমার খারাপ লেগেছে। অনেক ব্যক্তিগত তথ্যও প্রকাশ করে দিয়েছেন যে দোষে তসলিমাও দুষ্ট। তাহলে তসলিমার লেখার সাথে তফাত থাকলো কোথায়! লেখক আরও বলেছেন, তসলিমা ‘লজ্জা’ লিখে ভারতের মৌলবাদীদের বাহবা কুড়িয়েছেন। একই লেখাতে কলামিষ্ট সাহেব লেখকের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে স্বীকার করেছেন, আবার প্রিয় নবীর বিরূদ্ধে লিখে উনার ধর্মীয় প্রাণে আঘাত করেছেন বলে তসলিমাকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। একদিকে মাওলানা সাহেবের হুমকীকে সমর্থণ করতে পারেননি, অথচ অন্যদিকে বলেছেন, মাওলানা সাহেবের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লেগেছিল বলেই মাওলানা সাহেব তসলিমার মাথার মূল্য পঞ্চাশ হাজার টাকার ঘোষণা দিয়েছিল।
কারো ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করার মধ্যে আমি নান্দনিক কিছুই খুঁজে পাইনা। আমি কলামিষ্ট সাহেবের সাথে এই ব্যাপারে একমত প্রকাশ করছি। তসলিমা এক লাফে গাছের মগডালে উঠতে চেয়েছিল। সে ধর্মপ্রাণ মানুষের আবেগ অনুভূতির তোয়াক্কা না করেই ধর্মকে নিয়ে কঠিন ভাষায় সমালোচনা করেছেন। কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা খুবই নিন্দণীয়, খুবই নিষ্ঠুর কাজ। ্মানুষ তার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পেলে সেটা হৃদয়ে কতটা রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করে, আমি নিজেও অনেকবার হৃদয়ে সেই রক্তক্ষরণ টের পেয়েছি। তবে কাউকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাইনি আজ পর্যন্ত। কারন আমি বিশ্বাস করি, ধর্মীয় বিশ্বাস এমনই এক বিষয়, যতক্ষন নিজে বিশ্বাসে অটল থাকি, ততক্ষন বাইরে থেকে কেউ শত আঘাতেও আমার বিশ্বাসে ফাটল ধরাতে পারবেনা। হাজার হাজার বছর ধরে হৃদয়ে ধারন করে থাকা বিশ্বাস কি একজন তসলিমার এক কথাতেই ভেঙ্গে যেতে পারে? ধর্মীয় বিশ্বাস কি এতই ঠুনকো? তবে তসলিমার নিজের বিশ্বাসে ফাটল ধরেছিল বলেই যে সে যাহা খুশী তাহাই লিখবে, এটাও আমি মানতে নারাজ। মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলেই তার অপব্যবহার করা ঠিক না।তবে আমার বিশ্বাসে জোর থাকাটাকেই আমি প্রাধান্য দেই, অন্যের বিশ্বাসের প্রতিও শ্রদ্ধা রাখি।
কলামিষ্ট সাহেবের ধর্মীয় অনুভূতির প্রেক্ষিতেই নিজের দুটো কথা বলি। যেহেতু আমি হিন্দু ধর্মাবলম্বী, তাই ছোটবেলা থেকেই জেনে এসেছি হিন্দুরা গরুর মাংস খায় না। আমাদের সাথে সাথে ধর্মীয় সংস্কৃতির এই ব্যাপারটি মুসলিমরাও জানেন, এমনকি অনেক ভিনদেশীও জানেন। কিনতু দেশে যেহেতু আমরা ছিলাম সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু ছেলেমেয়েরা কোরবাণী ঈদের সময় গরুর মাংস খাওয়ার পর বড় বড় হাড্ডিগুড্ডি আমাদের আঙিনাতে ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলত। থালার মধ্যে মুড়ি আর গরুর মাংস নিয়ে আমাদের ঘরের সামনে দিয়ে হেঁটে বেড়াত আর ছড়া কাটত, “ নম নম তুলসীপাতা, হিন্দুরা খায় গরুর মাথা’। ঐসব ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরা শুনেও না শোনার ভাণ করতেন। আর খেলতে গিয়ে ঝগড়া লাগলে ‘মালাউনের বাচ্চা’ বলে গালি দিয়ে খেলাতে হেরে যাওয়ার প্রতিশোধ তুলত। এভাবেই আমরা অন্তর ক্ষয়ে বড় হয়েছি।
আমার মা গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা ছিলেন। উনার সহকর্মী মুসলিম শিক্ষিকার ছেলে নামকরা এক হিন্দু অধ্যাপকের মেয়েকে বিয়ে করেছে। সেই অধ্যাপককে একনামে সকলেই চিনতো। তখন হিন্দুকে মুসলমান বানানোর মধ্যে দারুন আনন্দের ব্যাপার থাকত। সেই আনন্দের রেশ ধরেই বিয়ের দুই দিন পর সেই শিক্ষিকা স্কুলে এসে তাড়াতাড়ি বাড়ী ফিরে যেতে চাইলেন। কারন হিসেবে বলেছিলেন, “ আজকে আমাদের বৌ কে গরুর মাংস খাওয়ানো হবে। সেই উপলক্ষ্যে বাড়ীতে অনেক মেহমান আসবে”। শুনেই বাকী মুসলিম সহকর্মী শিক্ষকেরা আনন্দোল্লাস করে উঠেছিলেন। শিক্ষকরুমে আমার মা ছাড়াও আরও কয়েকজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষক ছিলেন। আনন্দ প্রকাশের সময় তাঁদের অনুভূতির কথা একবারও কেউ ভেবে দেখেনি। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার মেয়েও একসময় মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে। সেই শিক্ষিকা ছিলেন কমিউনিস্ট পার্টির নেত্রী। ধর্মীয় আচার পালনে বিশ্বাস করতেননা। কিনতু তা বললেই কি হয়? স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকারা অতি উৎসাহে কোর্ট ম্যারেজ শেষে প্রধান শিক্ষিকার বাড়ীতে মুসলিম রীতি অনুসারে বিয়ের আয়োজন করে। নামে হিন্দু প্রধান শিক্ষিকার মেয়ের মুসলিম রীতিতে বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেকের সাথে আমার মা’কেও নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। আমার বাবা একটি কথাই বলেছিলেন, “ প্রয়োজনে চাকুরী ছেড়ে দিও, কিনতু চাকুরী রাখার খাতিরে নিজের আদর্শ জলাঞ্জলী দিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে খুশী করার প্রয়োজন নেই। তুমি যাবেনা এমন বিতর্কিত অনুষ্ঠানে”। পরদিন আমার মা স্কুলে যেতেই প্রধান শিক্ষিকা একফাঁকে বলেছিলেন, “ আপনি আসেননি, আমি খুবই খুশী হয়েছি। এই অনুষ্ঠান আয়োজনে আমার কোন হাত ছিলনা। মিসেস খাতুন নিজ দায়িত্বে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছেন”। এই একটি কথার মধ্যেই প্রধান শিক্ষিকার মনের অসহায়তার কথা ফুটে উঠেছিল। উনি উনার নীতির কারনে ধর্মীয় আচার পালন করতেন না, কিনতু এটাকে অজুহাত ধরে নিয়ে সেদিন সংখ্যাগুরু শিক্ষকের দল যে কাজটি করেছিল, সেটা ছিল সংখ্যালঘুর ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত।
এখনও অনেক মুসলিম বন্ধুদের বাড়ীতে বেড়াতে গেলে টেবিলে খাবার দাবারের প্রচুর আয়োজনের মধ্যে ‘গরুর মাংস’ও থাকে। গরুর মাংস খাইনা বললে, সাথে সাথে একদল নিমন্ত্রিত অতিথির উপস্থিতেই আলটপকা কেউ বলে ফেলে,“কেন, অনেক হিন্দুই তো আজকাল গরুর মাংস খায়, আপনি খাবেন না কেনো”? প্রথম কথা, হিন্দু অতিথির সামনে ‘গরুর মাংস’ পরিবেশন করাটাই হচ্ছে এক নম্বর অভদ্রতা, দুই নাম্বার অভদ্রতা হচ্ছে , অন্যেরা গরু খায় বলে তাকেও গরুর মাংস খাওয়ার জন্য অন্যায় আবদার করা। এগুলোওতো একধরনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শামিল। ধরে নিলাম, অনুষ্ঠানে হিন্দু –মুসলিম অনেকেই থাকে, তাই গরুর মাংস রান্না করা হয়। কিনতু এমনও হয়েছে, শুধুই আমরাই নিমন্ত্রিত, এমন অবস্থায়ও টেবিলে গরুর মাংস রাখা হয়েছে। আমরা যেহেতু উচ্চশিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে পড়ি, তাই আমাদের যে সমস্ত বন্ধু-বান্ধবের কথা বললাম, তারাও উচ্চশিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যেই পড়ে। তাদের কখনও মনে হয়নি, বছরের বারোমাসই তো গরুর মাংস খাওয়া যায়, একটা দিন কী একটি হিন্দু পরিবারের সম্মানে আইটেমটা বাদ দেয়া যায়না! এগুলোও অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিকে তোয়াক্কা না করার মতই ব্যাপার।
উপরের কথাগুলো লেখার ইচ্ছে ছিলনা। কলামিষ্ট সাহেবের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের প্রসঙ্গে সহমত পোষণ করেই নিজের না বলা কষ্টগুলো প্রকাশ করলাম। সমাজে কিছু মানুষ থাকে, যাদের কাছে নিজের মতটাকেই বেশী মূল্যবান মনে হয়, অন্যের ভালো লাগা বা মন্দ লাগার ব্যাপারটিকে গ্রাহ্যই করেনা। তবে সবাই তো আর এক রকম না। মেলবোর্ণের ডঃ লুৎফর ভাই এবং ভাবীর মত ধর্মপ্রাণ এবং সুবিবেচক বন্ধুও আমাদের ছিল, বাংলাদেশে শফিক ভাই এবং ডাঃ হাসমত আরা ভাবীর মত ধর্মপ্রাণ কিন্তু সুবিবেচক বন্ধু আমাদের আছে, যাঁদের মুখ থেকে কখনও অন্যের প্রতি ঈর্ষা বা বিদ্রূপ- বিদ্বেষমূলক কথা শুনিনি। আমেরিকাতেও তেমন বন্ধু আছে। এভাবেই আশেপাশে দুই চারজন অকৃত্রিম বন্ধু পেয়ে অভিমান বুকে চাপিয়ে হাসিমুখেই বাকী সকলের সাথে মেলামেশা করি।
লজ্জা বইটির কথা বলতে গেলে বলতে হয়, সংখ্যাগুরুদের কাছে তা অস্বস্তির হলেও পৃথিবীর সকল সংখ্যালঘুদের জন্য বইটি ছিল সান্ত্বনাস্বরূপ। এই সংখ্যালঘু যে কেউ হতে পারে। সে বাংলাদেশের হিন্দুও হতে পারে, পাহাড়ী আদিবাসীরাও হতে পারে, ফিলিস্তিনি অসহায় মুসলিম জনগনও হতে পারে। এরা হতে পারে আমেরিকান ইনডিয়ান, হতে পারে অস্ট্রেলিয়ার এবরিজিনিজ। ‘লজ্জা’ বইটি আমাদের মত ডরপুক, বোবা শ্রেণীর সংখ্যালঘুদের জন্য একটি দলিলস্বরূপ। কারো ভালো লাগতে পারে, কারো কাছে খারাপ লাগতে পারে। কিনতু ‘লজ্জা’র কাহিণী বিন্যাসে সাহিত্য না থাকলেও ঘটনা তো অনেকটাই সত্যি। কলামিষ্ট সাহেব নিজে অত্যন্ত ভালো মানুষ, অসাম্প্রদায়িক। আপনি হয়ত সংখ্যালঘুদের মনের খবর জানেননা, তাই আপনি ‘লজ্জা’ পড়ে যুগপৎ ক্ষুব্ধ ও অবাক হয়েছেন। কিনতু তসলিমা নিশচয়ই তেমন ভুক্তভোগীদের অনেক কাছাকাছি যেতে পেরেছেন, তাই তার নিজের বিবেক থেকে ‘লজ্জা’ লিখেছেন। উনার লেখা নিয়ে কেউ রাজনীতি করবে, এমন ভেবে তো আর তিনি ‘লজ্জা’ লিখেননি! আর ভারতের হিন্দু মৌলবাদীরা এই বই নিয়ে বিশ্রী রাজনীতি করেছে, বাংলাদেশের সরকার রাজনৈতিকভাবেই তার জবাব দিতে পারত, তা না দিয়ে বইটি নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষনার পরেই বইটি পাঠকের হাতে হাতে পৌঁছে গেছে। নাহলে কার এত দায় পড়েছে, পয়সা খরচ করে ওসব ‘ছাইপাশ’ পড়ার। তবে আমি পড়েছি ‘লজ্জা’, বেশ কয়েকবার। সান্ত্বণা পেয়েছি বইটি পড়ে, মনে হয়েছে একজনকে পেলাম যাঁর মর্মে পৌঁছেছে আমাদের অসহায় বোবা কান্না।
তসলিমা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে টুইটারে যা-ই লিখে থাকুক না কেনো, সেটা তেমন কারো নজরেই আসতোনা। এই লেখার বিরূদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হতেই পাঠক আবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে। শুধু পাঠকই বা বলবো কেনো, প্রথিতযশা কবি সাহিত্যিকরাও দেখি আবার মুখ খুলতে শুরু করেছেন। প্রখ্যাত এক কবি অভিযোগ করেছেন, ‘ক’ বইটিতে তসলিমা তাঁকে যথাযথ সম্মান না দিয়ে সাধারন মানের লেখক বলেছেন। অতি আলোচিত-সমালোচিত বই ‘ক’ তে তসলিমা দেশের নামকরা কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে মুখরোচক সব কাহিণী লিখেছেন। বই প্রকাশিত হওয়ার পর কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, কেউ বা তসলিমার বিরূদ্ধে কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন। বইটি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। নিষিদ্ধ জিনিসের পেছনে ছোটা মানুষের আদিম অভ্যাস। বই নিষিদ্ধ ঘোষণার সাথে সাথে বই ফুটপাতে বিক্রী শুরু হলো। মানুষও হুমড়ী খেয়ে ‘ক’ কিনতে শুরু করলো। যে বই থাকতে পারতো কিছু সংখ্যক পাঠকের কাছে, তা হয়ে গেল উন্মুক্ত।
সরকার থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত বই তো আর লাইব্রেরীতে পাওয়া যাওয়ার কথা না, তাই তসলিমার বই চলে গেল ফুটপাতের চটি বইয়ের সারিতে। এভাবেই তসলিমাও হয়ে গেল চটি লেখিকা। এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারতো। কিনতু আমাদের তথাকথিত বুদ্ধিজীবি সমাজ সেটা আর হতে দিচ্ছেন কই? নাহলে ‘ক’ তে যেখানে উক্ত কবির নামে কোন মুখরোচক কথা নেই, এতেই তো উনার হাঁফ ছেড়ে বাঁচার কথা, উনি হাঁফ না ছেড়ে খুঁচিয়ে আবার নিয়ে আসছেন সেই পুরানো দিনের হারিয়ে যাওয়া গল্প। উনার লেখা পড়ার পর অনেক নতুন পাঠক অনলাইনে গিয়ে আবার ‘ক’ পড়বে, যে গল্প শেষ হয়ে গিয়েছিল, তা আবার নতুন করে শুরু হবে। সেই নতুন পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগবে, “ এই চটি বইয়ের লেখিকাকে নিয়ে এখনও এত কথা কেনো? তবে কি উনার লেখায় সত্যতা আছে, যা সকলকেই দহন করে চলেছে”!! নাকি তসলিমার কথাই ঠিক, আমাদের সমাজে সে ‘নারী’ বলেই তার এমন হেনস্তা??
বর্তমান সময়ের পাঠকের মনে আরেকটি প্রশ্নও জাগবে, তসলিমা কে ‘ক’ এর মত এমন একটি বই লিখতে হলো কেনো? আজকে লেখকসমাজ যেভাবে তসলিমার বিরূদ্ধে সোচ্চার হয়েছে, যেদিন তসলিমাকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হলো, সেদিন লেখকসমাজ কেনো প্রতিবাদ করেনি? সেও তো লেখক সমাজেরই অংশ ছিল! না কি আসলে সে একটু ব্যতিক্রম স্বভাবের নারী বলেই, সে খুব সহজে সব পুরুষের সাথে মিশত বলেই তাকে তখন মিথ্যে খাতির করা হয়েছিল! তাকে দারুন লেখিকা বলে ভুলভাল বলে আকাশে তুলে দেয়া হয়েছিল! কলামিষ্ট সাহেব বলেছেন, তসলিমা তাঁর লেখা ছাপানোর জন্য তরুন লেখদের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতেন। এটা কেমন কথা হলো! লেখালেখি ভেতর থেকে আসতে হয়। কাউকে খাতির করলেই যদি মগজ থেকে লেখা আপনি আপনি বেরিয়ে আসতো, তাহলে তো সারাদেশে লেখিকার হাট বসে যেত। তারপরেও তখনকার লেখক সমাজ তসলিমাকে তো তাদের একজন হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। তাহলে তাঁর বিপদের সময় কেনো তাঁর পাশে দাঁড়ালেন না! কেনো যেই মাত্র তাকে দেশছাড়া করা হয়েছে, অমনি তার পায়ের কাছ থেকে ‘মই’টিও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। মই সরে যাওয়ায় তসলিমা যে আছাড় খেয়েছেন, চরম ব্যথা পেয়ে তার ঘোর নিশ্চয়ই কেটে গেছে। যাদের বন্ধু ভেবে নাচন কুদন করেছিল, বিপদের দিনে তারা সরে যেতেই আক্রোশে সে সব ফাঁস করতে শুরু করেছে। তসলিমাকে আমি এই কারনেই অপছন্দ করি। সে ‘ক’ বইটিতে যে সমস্ত কান্ড কীর্তির উল্লেখ করেছে, তা কোনভাবেই নারীদের সপক্ষে যায়না। তা একেবারেই তার নিজস্ব। এটা এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতাও। লেখক সমাজ তার বিপদে তার পাশে না দাঁড়িয়ে কাপুরুষতার পরিচয় দিয়েছেন আর তসলিমা লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে ‘ক’ বইটি লিখে এককালের বন্ধুদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতাই করেছেন।

7 comments:

  1. অসাধারন লেখা আন্টি...

    ReplyDelete
  2. অনেক ধন্যবাদ আদীব এমন সাহসী মন্তব্যের জন্য। ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন।

    ReplyDelete
  3. KEU AMAKE EKDIN BOLECHHILO "JAR JETA BESI THAKE, SE SETA BESI APOCHOY KORE"......APNAR LEKHATA PORE SANKHA LAGHU R SANKHA GURU DER SAMPORKE DHARONATA R O SACHHO HOLO..........APANAR LEKHA TI SATTI PROSONSONIO......KHUB BHALO LAGLO.......BHALO THAKBEN.........

    ReplyDelete
  4. আমার লেখাটি পড়ে আপনার ভাল লেগেছে জানতে পেরে নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

    ReplyDelete
  5. A courageous effort to speak the truth. Anybody should appreciate it. But I am afraid about the reaction of the fundamentalists.

    ReplyDelete
  6. rita roy indian agent . bd people ghadha ejonno vabe uni valo kishu bolechen. o to bd er shob kishu baze chokhe dekhe. indian shob kishu churi korar poreo bd people ghum theke ude bole ohh india amder great friend

    ReplyDelete
    Replies
    1. মাননীয় কমেন্টদাতা, এমন সুচিন্তিত মতামতের জন্য ধন্যবাদ। বাংলাদেশের জনগনকে 'গাধা' বলছেন, আপনার দেশ কোথায়? অবশ্যই বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশ হলে তো আপনি নিজেই নিজেকে গাধা বলছেন। এটা কী ঠিক হলো? লেখককে ইন্ডিয়ান এজেন্ট বলতে পেরেছেন অথচ নিজের নাম গোপন রেখেছেন। বুঝাই যাচ্ছে আপনি বাংলাদেশ বা ভারত কোন দেশেরই নন, বাকী থাকলো কি? পাকিস্তান

      Delete