Friday, February 22, 2013

প্রজন্ম চত্বর ও একজন নগন্য ব্লগারের ভাতঘুম!

আজ আবিষ্কার করলাম, গত আট দিনে এক বেলার জন্যও ভাত খাইনি, মানে ভাত খাওয়ার কথা খেয়াল হয়নি। অথচ ভাত আমার অতি প্রিয় খাদ্য। তিন বেলা ভাত খাই না অবশ্য, দেশে থাকতে দু'বেলা ভাত খেতাম, আর আমেরিকান হওয়ার পর থেকে একবেলা ভাত খাই। বেশীর ভাগ সময়, রাতের বেলাতেই জম্পেশ করে তিন চার পদ দিয়ে ভাত না খেলে মনের মধ্যে কেমন একটা অপূর্ণতা টের পাই। এমনও হয়েছে, আমেরিকান ডিনারে গিয়েছি, ঘাস-পাতা (স্যালাড), দিয়ে স্যান্ডুইচ বানিয়ে খেতে হয়েছে, কারণ আমি তো আবার হ্যাম বা বীফ, অথবা টার্কী, কোনটাই খাইনা। ডেজার্ট হিসেবে হয়তো দু'পিস কেক খেয়ে বাড়ী ফিরেছি। বাড়ী ফেরার একটুক্ষণ পরেই শুরু হয়ে যেত 'অপূর্ণতার অস্বস্তি'। ভাত না খাওয়ার অতৃপ্তি। পরিবারের সবার কাছে হাসির পাত্র হয়ে যাব ভেবে হয়তো বা  ভাত না খাওয়ার অতৃপ্তি নিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছি। নাহলে একমুঠো ভাত খেয়ে ঘুমিয়েছি। যত নামী দামী রেস্টুরেন্টে খেয়ে আসি না কেন, ভাত না খেতে পেলে মনে হয় জীবনই বৃথা।

এমন অনেক বার হয়েছে, মেয়েদের সাথে সোস্যাল স্টাডিজ ফেয়ার, সায়েন্স ফেয়ার, স্পীচ কম্পিটিশানে গেছি, ধারে কাছে কোথাও ইন্ডিয়ান বা বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট নেই, মুখ গোঁজ করে আমেরিকান ঘাস-পাতা, নাহলে ইটালিয়ান পিৎজা বা পাস্তার মত 'ম্যাদামারা' খাবার খেতে হয়েছে আমাকে। সবাই মিলে হয়তো বা দুই তিনদিনের জন্য সমুদ্র স্নানে গেছি, সেখানেও যতসব উদ্ভট খাবার খেতে হয়েছে। মেয়েদের বাবা মেয়েদেরকে খুব ভালোবাসে, তাই মেয়েদের শখেই সব সময় সায় দেয়, তারপরেও মনে হয় মাঝে মধ্যে মেয়েদের মায়ের দুঃখী চেহারার দিকে তাকিয়ে হৃদয়ের কোথাও না কোথাও যন্ত্রণা হয়। সেজন্যই বেশ কয়েক বছর ধরে যে কোন স্থানে বেড়াতে যাওয়ার সময় রাইস কুকার, চাল, ডিম, আলু, কাঁচালঙ্কা, সরিষার তেল, লবন সাথে করে নিয়ে নেয়। রাতের বেলাটা অন্ততঃ হোটেলের রুমে বসে ভাত আর আলু ডিম সেদ্ধ দিয়ে চালানো যায়। সাপও মরে লাঠিও ভাঙ্গে না। আমিও খুশী থাকি, তার পকেটও নিরাপদ থাকে।


আমার মত এমন ভাত পাগল মানুষ একটানা আট দিন ধরে ভাত খাইনি, এটা গিনেসবুকে উঠার মত ঘটনা। আমার গণসংযোগ খুব দূর্বল বলেই গিনেসবুকে নাম উঠলো না, নাহলে মাঝে মাঝেই তো দেখি, এর নাম গিনেস বুকে, তার নাম গিনেস বুকে উঠছে, ওথচ আমার নাম উঠলো না। এদিকে এমন আশ্চর্য্যজনক ঘটনার পরেও আমার ভাত না খাওয়ার কথা ঘরের মানুষই জানে না। ঘরের মানুষের অবশ্য দোষ দেই না, সে আমাকে দেখে কম্পিউটারে মাথা গুঁজে বসে থাকি।  সে ত আর জানেনা, খাওয়া -দাওয়া, রান্না বান্না ভুলে  কম্পিউটারে বসে বসে আমি কী করি। তার না জানার কারণ হচ্ছে, সে ফেসবুক বা ব্লগ, এ দুটোর কোনটাতেই  থাকে না। টিভিতে বাংলা নিউজে ব্লগার অ্যাক্টিভিটির খবর শুনে বেশ উচ্ছ্বসি্ত হয়, অথচ জানেইনা তার ঘরেই ব্লগার বসে আছে।

ব্লগিং তো আছেই, তার উপর ডঃ ওজ'এর হেলদি ডায়েট প্রোগ্রাম আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আমরা গত একমাস ধরেই দুপুরে স্যালাড বা ওরকমই কিছু খাই, রাতে এক মুঠো পরিমান ভাত, সাথে ডাল, সব্জী, মাংস/মাছ  খাই। এতে আমার উপর রান্নার চাপও কমে গেছে। রান্নার চাপ কমে যাওয়াতে আমি খুব আগ্রহের সাথে শাহবাগের 'প্রজন্ম চত্বরে' চলে যাই। ফেসবুকে ঢুকে যাওয়া মানেই প্রজন্ম চত্বরে চলে যাওয়া। এ ওকে 'ছাগু' বলছে, সে তাকে 'গেলম্যান' বলছে, সব কিছু বুঝিনা , কিন্তু খুব এক্সাইটেড ফিল করি। আমার এক বন্ধুস্থানীয় ভদ্রলোক সেদিন দুষ্টামী করেই আমাকে 'ছাগু' ডেকেছে। আমিও বলেছি, " দূর মিয়া, তুমি হইলা 'ছাগু'র নেতা, মহা ছাগু'। কী চমৎকার এক অনুভূতি। এখানেই গেরো লেগেছে।  গত আট  দিনের তুমুল উত্তেজনায় আমি ঘরের বাকী সদস্যদের কথাই ভুলে গেছি। ক্ষিদে-তৃষ্ণাও ভুলে গেছি। ওয়ালমার্টে যাই ঠিকই, কিন্তু কাজে মনোযোগ দিতে ভুলে গেছি। আমার মাথায় সব সময় ঘোরে, আজ কী হলো চত্বরে, কে জানে!


দুইদিন আগেই দেখি, আমার কর্তা ফ্রীজার থেকে দশ পাউন্ড চিকেন লেগের প্যাকেট বের করে 'থ হতে দিয়েছে, সাথে স্যামন ফিশ ফিলে। স্বাভাবিকভাবেই জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়েছি, উত্তরে খুব দৃঢ়চেতা মনোভাব নিয়ে বলে, " গ্রীল করবো"।
বলি, " তা এতবড় প্যাকেট দিয়ে কী হবে? সাথে আবার মাছের প্যাকেটও বের করেছো কেন"?

" ডঃ ওজ তো না খেয়ে থাকতে বলেনি,  ঘরে তো দেখি আজকাল রান্না বান্না বন্ধ। তাই  একবারে  বেশী করে গ্রিল করে রাখি, আগামী সাতদিন চলে যাবে।"

মনের ভেতর একটু দ্বিধা বা সংকোচ বোধ করছিলাম, কিন্তু পরক্ষণেই গা থেকে সমস্ত দ্বিধা ঝেড়ে ফেললাম। এখন সময়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, স্বামী যদি ভাল 'কুক' হয়, নিজে থেকে রান্নায় এগিয়ে আসে, তাকে স্বাগত জানানোটাই বুদ্ধির কাজ। এখন সময় অন্যরকম। এই মুহূর্তে অত মেয়েলী সেন্টিমেন্ট নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আমার মা-ও বেঁচে নেই যে আমাকে বকা দিবেন, কেন রান্নাবান্না না করে বিপ্লব করছি। প্রফেসার ভদ্রলোককে ওভাবেই রেখে আমি কাজে চলে গেছি। রাতে বাড়ী ফিরে 'গ্রিলড চিকেন' খেয়ে কম্পিউটারে বসে গেছি। একবারের জন্যও মনে পড়ে নি, শুধু গ্রিলড চিকেন খেলাম, ভাত বা রুটি কিছুই খেলাম না। রাত দুইটা/তিনটা পর্যন্ত জেগে থাকি, ব্লগারদের পোস্ট দেখি, পড়ি আর হাসতে হাসতে লুটিয়ে পড়ি। হঠাৎ করেই পেটে ছুঁচোর লম্ফ-ঝম্ফ টের পাই। হাতের কাছে রেখে দেয়া এক কাপ দই খেয়ে ফেলি। খেয়ালও হয়না, আমি আমার সবচেয়ে অপছন্দের খাবারটি অবলীলায় খেয়ে ফেলেছি।

ঘটনা ঘটেছে গতকাল। মাঝরাত্তিরে বসে প্রজন্ম চত্বরের মহাসমাবেশ নিয়েই ভাবছিলাম। এক কলামিস্ট বন্ধু চ্যাট বক্সে নক করতেই এক কথায় দুই কথায় জানতে চাইলাম , সে ঐ মুহূর্তে কী করছে। জানালো, দুপুরে খাওয়ার জন্য তৈরী হচ্ছে, খেয়ে দেয়ে প্রজন্ম চত্বরে যাবে, মহাসমাবেশে উপস্থিত থেকে বইমেলা ঘুরে আসবে। বন্ধু দুপুরের খাবার খাচ্ছে ডাল, লালশাক, আর মাছের ঝোল দিয়ে। আমার হঠাৎ করেই কান্না পেয়ে গেল। মনে পড়ে গেল, আমি অনেকদিন ধরে ভাত খাই না। আমি রান্নাও করিনা, খাইও না। আমার ঘরের আর দু'জন মানুষ কী খাচ্ছে, সে খবরও রাখি না। ট্র্যাশ ক্যানে দেখি মাছের লম্বা লম্বা কাঁটা পড়ে থাকে। অর্থাৎ গ্রিলড স্যামন খেয়ে তারা রাত পার করে দিচ্ছে। দুপুরে অবশ্য খুবই সুস্বাদু স্যুপ বানিয়েছিলাম এক সসপ্যান। এখন সময়টা একেবারেই অন্যরকম। ভীষন এক অগ্নিপরীক্ষা শুরু হয়েছে। কী উজ্জ্বল, মেধাবী তরুণ-তরুণীরা আজ মাঠে নেমেছে।  আমরা দেশে নেই বলে কিছুই করতে পারছি না, এমন গ্লানি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতেই অনলাইনে বসে থেকে আমার যতটুকু সাধ্য, আমি করে চলেছি। আমার তিন মেয়ের মধ্যে এক মেয়ে খুব হুজুগে নাচনি। আমার সাথে সাথে সেও দেখি বুঝে বা না বুঝেই বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে লেখা স্ট্যাটাসগুলো শেয়ার করে, লাইক দেয়। নিজেও প্রজন্ম চত্বরের ছবি সংগ্রহ করে কভার পিকচার বানায়। অথচ আমার মেয়েগুলো সেই ছোট্টবেলাতেই আমেরিকা চলে এসেছে। আমার মেয়ের কান্ড দেখে আমি খুশী হই, ভালো লাগে।

আজ আমার কাজের স্কেজিউল ছিল বেলা বারোটা থেকে। ঘুম থেকে উঠেছি সকাল নয়টায়। ঘুম থেকে জেগে আমার প্রথম কাজই হচ্ছে কম্পিউটার অন করা। তারপর আমি দেবতা প্রণাম করি। কম্পিউটারে বসে কিছু লেখার চেষ্টা করতে গিয়েই মনে পড়ে গেলো, আজ আমাকে কিছু রান্না করতে হবে। অ্যাট লিস্ট, একটা মাছের ঝোল। বাড়ী ফিরবো রাত নয়টায়, আমার মেয়ে আর মেয়ের বাবা না খেয়ে থাকবে। প্রতিদিন কী গ্রিলড চিকেন খাওয়া যায়? খুবই ঝটপট করে 'বাইল্লা মাছ'এর চচ্চড়ি রান্না করে ফেললাম, নিয়ম ভেঙ্গে ভাতও রান্না করলাম। আজ নিয়ম ভাঙ্গার দিন। আমার একটি লেখার উপর কেউ কেউ খুব বাজে মন্তব্য করেছে, আমি সাধারণতঃ কারো খারাপ কমেন্টের উত্তর দেই না, আজ দিলাম। আজ নিয়ম ভাঙ্গার দিন। কোন 'ছাগু'কে ছাড় দেয়া হবে না। এটাই প্রজন্ম চত্বরের মূল শ্লোগান। পনের দিন ধরে অনলাইনের ভেতর দিয়েই প্রজন্ম প্রজন্ম করেছি, ব্লগে একটার পর একটা লেখা পোস্ট করেছি, এগুলো করতে করতে আমি নিজেও প্রজন্মচত্বরের অংশীদার হয়ে গেছি। ওদের সুরে সুর মিলিয়ে আজ থেকেই বলা শুরু করেছি,

" কোন ছাগুকে ছাড়ান দেবো না।" প্রথিতযশা কলামিস্টের ওয়ালে গিয়ে কাদের সিদ্দিকীর অপরাধ সম্পর্কে মন্তব্য লিখে এসেছি, কাদের সিদ্দিকী একজন  দেশবরেণ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা। উনার উচিৎ ছিল, গণজাগরণ মঞ্চে উপস্থিত হয়ে এই প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের পাশে দাঁড়ানো, পাশে দাঁড়িয়ে হুংকার ছাড়া, কিন্তু উনি তার ধারে কাছে দিয়েও যাননি, উলটো এক কুখ্যাত সম্পাদক, 'উত্তরা ্ষড়যন্ত্রের নায়কের' পক্ষে ওকালতি করা শুরু করেছেন। তরুণদের পাশে তো দাঁড়ানইনি, উলটো তরুণদের আন্দোলনকে বিতর্কিত করে তুলছেন নানারকম সাম্প্রদায়িক কথা বলে। এই জন্যই উনার প্রতি দূর্বল কলামিস্টের ওয়ালে নিজের মতামত লিখে দিয়েছি। এও এক ধরণের পবিত্র কাজ। আমার পক্ষে এটুকু করাও অনেক।

এবার ওয়ালমার্টে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে। খুব লোভ হচ্ছে মাছের ঝোল দিয়ে ভাত খেতে। আজ নিয়ম ভাঙ্গার দিন। খেলাম মাছের ঝোল দিয়ে ভাত। খাওয়ার সময় মনে হচ্ছিল, স্বর্গ থেকে পাঠানো হয়েছে এই খাবার। পৃথিবীর খাবার এত সুস্বাদু হতেই পারে না! টের পেলাম, অনেক দিন পর ভাত খাচ্ছি, আঙুল গুনে দেখি, গত বুধবার রাতে খেয়েছিলাম ভাত, আর আটদিন পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খাচ্ছি ভাত। আরে! এওতো একধরণের কৃচ্ছ্রসাধন! আমি ভাতের পোকা, সেই ভাত না খেয়ে আটদিন পার করে দিলাম ঘোরের মধ্যে। তার মানে আমিও এই আন্দোলনের একজন অংশিদার হতে পেরেছি। আহ! কী সুখ!  খেয়ে দেয়ে কাজে চলে গেলাম।


ওয়ালমার্টে পৌঁছার ঘন্টাখানেক পর থেকেই দেখি ঘন ঘন 'হাই' উঠে! আরে! 'হাই' উঠে কেন? এরপর দেখি দু'চোখের পাতা ভারী লাগে। আমি তো কখনও দুপুরে ঘুমাই না। আমার এমন তো হয় না। তাই এমন পরিস্থিতে কী করবো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না! বাথরুমে গিয়ে চোখে মুখে জল ছিটিয়েছি, কফিরুমে গিয়ে হট চকোলেট মিল্ক খেলাম, ঘুম তাড়িয়ে  ফ্লোরে ফিরতেই দেখি আবার ঘুম পায়। একটু বাদেই খেয়াল হয়েছে, এটাকেই বলে 'ভাতঘুম'।  ঘুম ঘুম চোখে, ঘন ঘন 'হাই' তুলে নয়টি ঘন্টা ছিলাম ওয়ালমার্টে, বের হওয়ার কোন উপায় ছিল না। আজকের দিনটাই অন্যরকম। আজ সব কিছু ভিন্ন গতিতে চলবে। নাহলে নয় ঘন্টা একটানা আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি হবে কেন? বৃষ্টি হয়েছে বলেই তো আমি লাঞ্চ ব্রেকে বাড়ী ফিরতে পারি নি। মাথার মধ্যে ঘুরছিল, মহাসমাবেশ থেকে কী কর্মসূচী দিল, কে জানে! আহারে! বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েরা কী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে একটানা সতের -আঠারো দিন ধরে। এর মধ্যে দু'জন সহযোদ্ধাকে হারিয়েছে, সারাক্ষণ হুমকী ধামকীর মধ্যেই ওরা এগিয়ে যাচ্ছে। কী কর্মসূচী দিল কে জানে! সকালে এক ফাঁকে 'আমারব্লগে' প্রীতমের লেখা পড়েছিলাম, যে কয়টি আলটিমেটাম দেখেছি, ভালো লেগেছে। এতদিনে একটা নির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা পাওয়া গেছে। ডাঃ আইজু নামের আরেক মেধাবী ব্লগার সেই কবে থেকেই কলম চালিয়ে যাচ্ছে, সবাইকে উজ্জিবীত রাখছে নানা পরিকল্পনার ছক এঁকে দিয়ে। এমন মেধাবী ব্লগারদের নামে কুৎসা রটাচ্ছে কিছু 'ছাগু'? সকল ছাগুকে উচিৎ শিক্ষা দিতে হবে, অনেক বেশী বাড় বেড়েছে ছাগুদের। বাংলার মাটিতে 'ছাগু'র জায়গা নেই!

No comments:

Post a Comment