এপ্রিলের এক তারিখটিতে পৃথিবীর অনেক দেশেই কিশোর কিশোরীরা পরস্পরকে
বোকা বানানোর প্রতিযোগীতায় মেতে উ্ঠে। একজন আরেকজনকে কোনভাবে ধোঁকা দিতে
পারলেই ‘এপ্রিল ফুল’ বলে বিজয়োল্লাস করতে থাকে। আমরাও খেলতাম পরস্পরকে
বোকা বানানোর খেলাটি। কিনতু আমাদের কারো মনে কোনদিন প্রশ্ন জাগেনি, এই বোকা
বানানো দিবসটির উৎপত্তি কোখায়, অথবা কবে এর উৎপত্তি হয়েছিল! কৈশোরতো
এমনই হয়, যে কোন কিছুতেই বাঁধভাঙ্গা ঊচ্ছাসে উত্তাল হওয়া, প্রতিটি
মুহূর্তে শুধুই মজা করা, মজার উৎস নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট করার মত
বোকামী কেউ করতে চায়না। আর তাই ‘এপ্রিল ফুল’ ডে স্কুল জীবনেই বেশী পালিত
হতে দেখা যায়।
ছোটবেলাতে এপ্রিলের এক তারিখে অনেককেই ঠকাতাম। নানা ফন্দী ফিকির বের করতাম। ‘এই তোর মাথায় কি দেখতো!” বললেই অন্যজন মাথায় হাত দিয়ে দেখতো, সেখানে কিছুই নেই, সাথে সাথে উল্লাসে ফেটে পড়তাম, ‘এপ্রিল ফুল’ বলে। অথবা সাথের বন্ধুটিকে বলতাম, অমুকে তোকে ডাকছে। বেশীর ভাগ সময়ে বন্ধুরা ছুটে যায়, কেনো তাকে ডাকা হচ্ছে তা জানতে। গিয়ে ধোঁকা খায়, কারন আসলে কেউই ডাকেনি। ঠিক এমনটিই হয়ে থাকে পৃথিবীর নানা দেশে, তবে একেক দেশের আনন্দের ধরনটা হয়ত ভিন্ন হয়ে থাকে।
আমেরিকাতে একটি কমন ট্রিক হচ্ছে, ১লা এপ্রিলে সকাল থেকেই একজন অন্য আরেকজনকে বলে, ‘তোমার জুতোর ফিতে বাঁধা নেই কেনো?” অন্যজন সাথে সাথে চমকে গিয়ে পায়ের দিকে তাকাতেই সকলে বলে উঠে, ‘এপ্রিল ফুল’। আরেকটি ট্রিক হচ্ছে, (এটা অবশ্য খুব পরিচিতজনের সাথে করা হয়ে থাকে), আগে থেকেই চিনির পটে লবন ভর্তি করে রাখা হয়, ‘এপ্রিল বোকা’ যখন চিনি ভেবে লবনটাকে খাবারে মিশিয়ে খেতে শুরু করে, তখনই মনের আনন্দে এক চীৎকার, ‘এপ্রিল ফুল’! হোস্টেলে বা ডর্মে ছাত্রছাত্রীরা যেটা করে তা হলো, বন্ধুর ঘড়ির এলার্ম এক ঘন্টা পিছিয়ে রাখে। পরের দিন সকালের সেই ক্লাশটি বন্ধু মিস করে, ওটাতেই সকলের আনন্দ!
‘এপ্রিল ফুল’ ধারণাটি কোথা থেকে এসেছে, এখন পর্যন্ত তা নির্দিষ্টভাবে বের করা যায়নি। নানা মুনির নানামত আছে। তবে জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দীতে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে নতুন বর্ষ শুরু হয়েছিল ২৫শে মার্চ থেকে। কিনতু মার্চের শেষ সপ্তাহ ‘হলি উইক’ হওয়াতে নতুন বছর উদযাপন করা হতো ১লা এপ্রিল তারিখে। এভাবেই চলেছে ১৫৮২ সাল পর্যন্ত। এরপরে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে বছর শুরু হয়েছে ১লা জানুয়ারী থেকে। কিনতু তখন জনসংযোগ বা তথ্যপ্রবাহ খুবই ধীর লয়ে চলতো বলে অনেকেই জানতোনা ক্যালেন্ডারের এই পরিবর্তনের কথা। ফলে ফ্রান্সের প্রায় সকলেই ১লা জানুয়ারী ‘নিউ ইয়ার’ সেলিব্রেট করলেও কিছু মানুষ এরপরেও জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১লা এপ্রিলই ‘নিউ ইয়ার’ সেলিব্রেট করতো। সেই কতিপয় মানুষকেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারীরা ‘এপ্রিল ফিশ’ বলে উপহাস করতো। কেননা ছোট ছোট মাছ খুব সহজেই ধরা পড়ে বলেই বোকা বনে যাওয়া মানুষগুলোকে ‘এপ্তিল ফিশ বলেই ঠাট্টা করা হতো। কালের আবর্তে তখনকার সেই উপহাস আর নিছক উপহাস হিসেবে এখন আর মনে করা হয়না। পৃথিবীব্যাপী দিবসটি ‘ফান’ হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। এখনও ফ্রান্সে ১লা এপ্রিলের এইদিনে বাচ্চারা কাগজ কেটে মাছের আকৃতি তৈরী করে বন্ধুদের অজান্তেই তাদের পিঠে মাছটি সেঁটে দেয়। বন্ধুটি যখন জানতে পারে তার পিঠে মাছটি সাঁটা হয়েছে, তখন আর কিছু করার থাকেনা ‘এপ্রিল ফিশ’ উল্লাসধ্বনি শোনা ছাড়া!
ফ্রান্স থেকে শুরু হওয়া ১লা এপ্রিলের এই নিছক কৌতুকে ভরা দিবসটির মজা পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্রিটেন ও স্কটল্যান্ডেও এপ্রিল ফুলস ডে পালন করা শুরু হয়। পরবর্তীতে ইংলিশ ও ফ্রেঞ্চ অভিবাসীদের মাধ্যমেই আমেরিকাতেও এপ্রিল ফুলস ডে প্রচারিত হয়ে থাকে।
ইংল্যান্ডে ১লা এপ্রিল বেলা বারোটা পর্যন্ত চলে এপ্রিল ফুলের মজা। আমেরিকাতে চলে সম্পূর্ণ দিন। পর্তুগালে ‘লেন্ট (খৃস্টান সম্প্রদায়ের অনেকেই ঈস্টারের আগে ৪০ দিন রোজা রাখে, প্রার্থণা করে) শুরুর আগের রবিবার ও সোমবারে এপ্রিল ফুল পালিত হয়। ঐদিনে অনেকেই পরস্পর পরস্পরের প্রতি আটা বা ময়দা ছুঁড়ে দিয়ে মজা করে। রোমে এপ্রিল ফুলস ডে’র সমতুল্য কৌতুকের দিনটি হচ্ছে ‘ফেস্টিভ্যাল অব হিলারিয়া’ অথবা ‘রোমান লাফিং ডে’। ভারতে ‘হোলী’ বা রঙ খেলা উৎসবটি এপ্রিল ফুলস উৎসবের সমতুল্য বিবেচনা করা হয়। কারন একজন আরেকজনকে নানা বর্ণে রঙীণ করে দিয়ে আমোদ পায়।
সুতরাং, যে যেভাবেই পালন করুক, ২৫শে মার্চ থেকে ১লা এপ্রিল, যে দিনটিতেই এই কৌতুক বা ঠাট্টা দিবসটি পালন করা হোক না কেন, আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে আনন্দ করা, একা নয়, বন্ধুদেরকে সাথে নিয়ে মজা করা। বসন্তকালে প্রকৃতির রঙ বদলের সাথে সাথে মানুষের মনও রঙীন হয়, মনে থাকে আনন্দ উৎসবের আমেজ, সেই থেকেই মার্চের শেষ সপ্তাহটি থেকে শুরু হওয়া আনন্দ বা মজা শেষ হয় এপ্রিলের এক তারিখটিতে। কাজেই পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাওয়া যাবে, এপ্রিলের এই দিনটিতে কারো কাছে বোকা হয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।
ছোটবেলাতে এপ্রিলের এক তারিখে অনেককেই ঠকাতাম। নানা ফন্দী ফিকির বের করতাম। ‘এই তোর মাথায় কি দেখতো!” বললেই অন্যজন মাথায় হাত দিয়ে দেখতো, সেখানে কিছুই নেই, সাথে সাথে উল্লাসে ফেটে পড়তাম, ‘এপ্রিল ফুল’ বলে। অথবা সাথের বন্ধুটিকে বলতাম, অমুকে তোকে ডাকছে। বেশীর ভাগ সময়ে বন্ধুরা ছুটে যায়, কেনো তাকে ডাকা হচ্ছে তা জানতে। গিয়ে ধোঁকা খায়, কারন আসলে কেউই ডাকেনি। ঠিক এমনটিই হয়ে থাকে পৃথিবীর নানা দেশে, তবে একেক দেশের আনন্দের ধরনটা হয়ত ভিন্ন হয়ে থাকে।
আমেরিকাতে একটি কমন ট্রিক হচ্ছে, ১লা এপ্রিলে সকাল থেকেই একজন অন্য আরেকজনকে বলে, ‘তোমার জুতোর ফিতে বাঁধা নেই কেনো?” অন্যজন সাথে সাথে চমকে গিয়ে পায়ের দিকে তাকাতেই সকলে বলে উঠে, ‘এপ্রিল ফুল’। আরেকটি ট্রিক হচ্ছে, (এটা অবশ্য খুব পরিচিতজনের সাথে করা হয়ে থাকে), আগে থেকেই চিনির পটে লবন ভর্তি করে রাখা হয়, ‘এপ্রিল বোকা’ যখন চিনি ভেবে লবনটাকে খাবারে মিশিয়ে খেতে শুরু করে, তখনই মনের আনন্দে এক চীৎকার, ‘এপ্রিল ফুল’! হোস্টেলে বা ডর্মে ছাত্রছাত্রীরা যেটা করে তা হলো, বন্ধুর ঘড়ির এলার্ম এক ঘন্টা পিছিয়ে রাখে। পরের দিন সকালের সেই ক্লাশটি বন্ধু মিস করে, ওটাতেই সকলের আনন্দ!
‘এপ্রিল ফুল’ ধারণাটি কোথা থেকে এসেছে, এখন পর্যন্ত তা নির্দিষ্টভাবে বের করা যায়নি। নানা মুনির নানামত আছে। তবে জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দীতে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে নতুন বর্ষ শুরু হয়েছিল ২৫শে মার্চ থেকে। কিনতু মার্চের শেষ সপ্তাহ ‘হলি উইক’ হওয়াতে নতুন বছর উদযাপন করা হতো ১লা এপ্রিল তারিখে। এভাবেই চলেছে ১৫৮২ সাল পর্যন্ত। এরপরে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে বছর শুরু হয়েছে ১লা জানুয়ারী থেকে। কিনতু তখন জনসংযোগ বা তথ্যপ্রবাহ খুবই ধীর লয়ে চলতো বলে অনেকেই জানতোনা ক্যালেন্ডারের এই পরিবর্তনের কথা। ফলে ফ্রান্সের প্রায় সকলেই ১লা জানুয়ারী ‘নিউ ইয়ার’ সেলিব্রেট করলেও কিছু মানুষ এরপরেও জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১লা এপ্রিলই ‘নিউ ইয়ার’ সেলিব্রেট করতো। সেই কতিপয় মানুষকেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারীরা ‘এপ্রিল ফিশ’ বলে উপহাস করতো। কেননা ছোট ছোট মাছ খুব সহজেই ধরা পড়ে বলেই বোকা বনে যাওয়া মানুষগুলোকে ‘এপ্তিল ফিশ বলেই ঠাট্টা করা হতো। কালের আবর্তে তখনকার সেই উপহাস আর নিছক উপহাস হিসেবে এখন আর মনে করা হয়না। পৃথিবীব্যাপী দিবসটি ‘ফান’ হিসেবে পালিত হয়ে থাকে। এখনও ফ্রান্সে ১লা এপ্রিলের এইদিনে বাচ্চারা কাগজ কেটে মাছের আকৃতি তৈরী করে বন্ধুদের অজান্তেই তাদের পিঠে মাছটি সেঁটে দেয়। বন্ধুটি যখন জানতে পারে তার পিঠে মাছটি সাঁটা হয়েছে, তখন আর কিছু করার থাকেনা ‘এপ্রিল ফিশ’ উল্লাসধ্বনি শোনা ছাড়া!
ফ্রান্স থেকে শুরু হওয়া ১লা এপ্রিলের এই নিছক কৌতুকে ভরা দিবসটির মজা পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ব্রিটেন ও স্কটল্যান্ডেও এপ্রিল ফুলস ডে পালন করা শুরু হয়। পরবর্তীতে ইংলিশ ও ফ্রেঞ্চ অভিবাসীদের মাধ্যমেই আমেরিকাতেও এপ্রিল ফুলস ডে প্রচারিত হয়ে থাকে।
ইংল্যান্ডে ১লা এপ্রিল বেলা বারোটা পর্যন্ত চলে এপ্রিল ফুলের মজা। আমেরিকাতে চলে সম্পূর্ণ দিন। পর্তুগালে ‘লেন্ট (খৃস্টান সম্প্রদায়ের অনেকেই ঈস্টারের আগে ৪০ দিন রোজা রাখে, প্রার্থণা করে) শুরুর আগের রবিবার ও সোমবারে এপ্রিল ফুল পালিত হয়। ঐদিনে অনেকেই পরস্পর পরস্পরের প্রতি আটা বা ময়দা ছুঁড়ে দিয়ে মজা করে। রোমে এপ্রিল ফুলস ডে’র সমতুল্য কৌতুকের দিনটি হচ্ছে ‘ফেস্টিভ্যাল অব হিলারিয়া’ অথবা ‘রোমান লাফিং ডে’। ভারতে ‘হোলী’ বা রঙ খেলা উৎসবটি এপ্রিল ফুলস উৎসবের সমতুল্য বিবেচনা করা হয়। কারন একজন আরেকজনকে নানা বর্ণে রঙীণ করে দিয়ে আমোদ পায়।
সুতরাং, যে যেভাবেই পালন করুক, ২৫শে মার্চ থেকে ১লা এপ্রিল, যে দিনটিতেই এই কৌতুক বা ঠাট্টা দিবসটি পালন করা হোক না কেন, আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে আনন্দ করা, একা নয়, বন্ধুদেরকে সাথে নিয়ে মজা করা। বসন্তকালে প্রকৃতির রঙ বদলের সাথে সাথে মানুষের মনও রঙীন হয়, মনে থাকে আনন্দ উৎসবের আমেজ, সেই থেকেই মার্চের শেষ সপ্তাহটি থেকে শুরু হওয়া আনন্দ বা মজা শেষ হয় এপ্রিলের এক তারিখটিতে। কাজেই পৃথিবীর যে প্রান্তেই যাওয়া যাবে, এপ্রিলের এই দিনটিতে কারো কাছে বোকা হয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।
No comments:
Post a Comment